একটি কবিতার শেষ ইচ্ছা
শেখ হাবিব বাবু
একটি কবিতা ক্রমশ বড় হচ্ছে--
বিলিয়ন বিলিয়ন শুক্রাণুযোদ্ধাকে পরাস্ত করে ইতোমধ্যে সেই কবিতা এক নিষিক্ত মাতৃ জঠরের অধিপতি,
ধেইধেই করে বেড়ে উঠা কবিতা
কখনো হতে চায় হালাকু খান চেঙ্গিস, কখনো আলেকজান্ডার কখনো হিটলার--কবিতা জানে এই অনিবার্য বীর যোদ্ধার রক্তাক্ত ইতিহাস,
কখনো সক্রেটিস হয়ে পিয়ে যেতে চায় প্রহসনের একপেয়ালা গণতান্ত্রিক হেমলক।
একটি কবিতা ক্রমশ বড় হচ্ছে--পৃথিবীর প্রবল নিশ্ছিদ্র নিরাপদ দুর্গে,
ধেইধেই করে বড় হচ্ছে শিশু মুসার মত তাঁর প্রবল শত্রুর ঘরে,
একটি কবিতা বড় হচ্ছে বায়তুল মুকাদ্দাসের অন্দরমহলে মরিয়মের গর্ভে---জিব্রিলের কুদরতি ফুঁকে কবিতাটি যীশুর বাণীর মত এক ঐশ্বরিক বাণী হতে চায়--কবিতা জানে একদল মানুষ তাকে অস্বীকার করে ক্রুশ বিদ্ধ করবে।
একটি কবিতা ক্রমশ বড় হচ্ছে ইব্রাহীমের মত পৌত্তলিক পিতার ঘরে--কবিতা জানে নমরুদের বিশাল অগ্নিকুণ্ডে ভষ্ম হতে হবে তাকে।
একটি কবিতা ক্রমশ বড় হচ্ছে-- কবিতাটি নুহের প্লাবন হতে চায়,হতে চায় বিশ্বাসীদের তরণী,ইউনুস নবীর জপমাল্য।
একটি কবিতা ক্রমশ বড় হচ্ছে--কেনানের অন্ধ কুপে, কখনো ক্রিতদাস হয়ে ইজিপশিয়ান বাদশার প্রাসাদে,
একটি কবিতা বড় হচ্ছে প্রাসাদ থেকে কারাগারে অত:পর জুলেখার বরমাল্য হয়ে মিশরের সিংহাসনে।
একটি কবিতা ক্রমশ বড় হচ্ছে--কবিতাটি কখনো তাওরাত-যাবুর-ইঞ্জিল থেকে পবিত্র কুরআন হতে চায়,হতে চায় হেরার গুহায় মুহাম্মদের ধ্যানে লব্ধ প্রভুর প্রথম বাণী।
একটি কবিতা ক্রমশ বড় হচ্ছে--কবিতাটি শেষ পয়গম্বরের সত্যভাষণ হয়ে মানব মুক্তির সনদ হতে চায়।
একটি কবিতা ক্রমশ বড় হতে হতে প্রথম আকাশ থেকে বায়তুল মুকাদ্দাসের সিঁড়ি বেয়ে নেমে আসতে চায় শান্তির ফল্গুধারা হয়ে--একটি কবিতা থামাতে চায় প্যালেস্টাইনে শিশুর কান্না,ছিন্নভিন্ন লাশের শরীর বেয়ে নেমে আসা রক্তস্রোত--একটি কবিতা ক্রমশ হতে চায় বৌদ্ধের অহিংস বার্তা,লিংকনের ম্যাগনাকার্টা--দাসত্বের শৃঙ্খল ভাঙ্গা নজরুলের বিদ্রোহী কবিতা।
একটি কবিতা ক্রমশ ধেইধেই করে বড় হচ্ছে--একটি কবিতা কখনো মুসা কখনো ঈসা কখনো মুহাম্মদ হতে চায়,
একটি কবিতা ক্রমশ বড় হচ্ছে--কবিতাটির শেষ ইচ্ছা রেসকোর্স ময়দানে শেখ মুজিবের তর্জনী বেয়ে সে যেন হতে পারে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতা।