ADS

728 x 90

Post your add here

গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠানের "প্রতারণা"

November 30, -0001 12:00 am

পরীক্ষার হলে টুকলিফাই বা কপি, কে না করেছি আমরা। যে কোনো একটি শ্রেনির শীর্ষ ৪/৫ জন ছাড়া, বলা যায় প্রায় সব শিক্ষার্থীই এই টুকলিফাই বা কপি’র কাজটি করে থাকে। চমক হয় তখন, যখন দেখা যায় যে, যার লেখা কপি করা হয়েছে, স্কোর মেলে তার চেয়ে বেশি। অর্থাৎ কোনো বন্ধুর লেখা কপি করে আমি অথবা আমার লেখা কপি করা বন্ধুটি নম্বর বেশি পেলে ঘটে বিস্ময়। খেয়াল করুন, কপি করে উন্নতি করলে বিস্ময়ের সৃষ্টি হয়, অবনতি করলে নয়।

featured-image

যাই হোক, মূল প্রসংগে আসা যাক। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা হালের প্রযুক্তি দুনিয়ার গবেষণায় এক অনন্য বিস্ময়। বিষয়টি মানব জাতির জন্য শুভ না অশুভ, সংশ্লিষ্ট গবেষকরাই তা নিশ্চিত নন। প্রযুক্তি নিয়ে উচ্চশিক্ষিতদের কথা বাদ দিলাম, একেবারে সবচেয়ে কম যারা প্রযুক্তি নিয়ে লেখাপড়া করেন, খোঁজখবর রাখেন, তাদের কাছে যা নয় তা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা হিসেবে উপস্থিত হলে হাস্যরসের পাত্র হতে হবে। এখন পর্যন্ত পৃথিবীতে সবশেষ জ্ঞান দিয়ে তিনটি সত্যিকারের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সৃষ্টি করা হয়েছিলো। এবং মজার কথা হলো, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ক্ষমতা দেখে ওই তিনটি প্রকল্পকেই অত্যন্ত সুরক্ষার সাথে শাট ডাউন বা সুইচড অফ করে রাখা হয়েছে। কারন হিসেবে এসব খবরের ছিটেফোটা ইলন মাস্কের কাছ থেকে কিছুটা আসে, জাকারবার্গ চালাক মানুষ বিধায় এ ব্যাপারে চুপ থাকেন।


View Comments

এবার আসুন, দেশের একটি স্বনামধন্য গণমাধ্যম এই প্রযুক্তি নিয়ে কিভাবে প্রতারণার কাজটি করলো, সেটি বলি। একদম সহজ ভাষায় বলি, ইন্টারনেটের দুনিয়ায় রিয়েলিস্টিক থ্রি ডি এনিমেশন নামে চর্মচক্ষে দেখা যায় এমন একটি ব্যাপার অহরহ আছে। এই রিয়েলিস্টিক থ্রি ডি এনিমেশনে আগে থেকে লিখে রাখা একটি খবর পড়িয়ে দেয়া সম্ভব, তবে এটি কখনোই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নয়। আরো সহজ হলো, আগে থেকে লিখে রাখা একটি খবর যে কোনো কণ্ঠে রেকর্ড বা ধারণা করে নেট দুনিয়ায় হাজারো লিংক আছে সেখান থেকে যে কোনো রিয়েলিস্টিক থ্রি ডি’র সামনে জীবন্ত নারী বা পুরুষ কর্মী বসিয়ে দিলে একটি চেহারার কাঠামো তৈরি হয়ে যাবে, এরপর ওই রেকর্ডেড/ধারণকৃত খবরটি বসিয়ে দিলে বা থ্রি ডি চরিত্রটির সামনে ক্যামেরার মাধ্যমে খবরটি পড়ে গেলেই চলবে, বাকী কাজটুকু রিয়েলিস্টিক থ্রি ডি অ্যানিমেশন নিজ দায়িত্বে করে দিবে। এ ক্ষেত্রে কতটুকু উন্নতমানের পন্য আপনি নিয়েছেন, তার উপর নির্ভর করবে আপনার ফলাফল কি বের হবে। কিন্তু কোনোভাবেই এটিকে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বলা যাবে না, যদি কেউ বলে থাকে তাহলে তা স্রেফ প্রতারণার শামিল। যদি উদাহরন চান, তাহলে প্রথম কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সংবাদ উপস্থাপন করেছে চীন, তাদের কাজ দেখতে পারেন। এই রিয়েলিস্টিক থ্রি ডি দিয়ে কিভাবে কাজ হয় আরো ভালোভাবে বুঝতে চাইলে ইউটিউবে অসংখ্য ভিডিও পাবেন। আরো সহজ করে দেই, এই যে এতো উত্তেজনা চ্যাট জিপিটি নামের সফটওয়্যার নিয়ে; জানেনতো যারা এটি তৈরি করেছেন তারাই এটিকে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বলেন না, তারা বলেন এই চ্যাট জিপিটি হলো বৃহত পরিমানে তথ্যের এক অনন্য সম্ভার, যা মাত্র কয়েক ন্যানো সেকেন্ডে কাজ করে থাকে। সুতরাং র‍্যাম, রম, পিক্সেল, গিগাহার্টস, প্রোসেসর টাইপ টুকটাক প্রযুক্তি সম্পর্কিত শব্দজ্ঞান সমৃদ্ধদের কঠিন আত্মবিশ্বাসের সাথে খুব স্মার্টলি প্রযুক্তি সংক্রান্ত যে কোনো কিছুর উপস্থাপনে বিভ্রান্ত হবেন না। টুকলিফাই বা কপি করা নিয়ে লেখা শুরু করেছিলাম। কপি করা দোষের কিছু নয়, যদি তাতে আরো বেশি উন্নতি আনা সম্ভব হয়। ভারতের ওডিশায় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা দিয়ে সংবাদ উপস্থাপনার বিষয়টিকে বাংলাদেশের একটি স্বনামধন্য গণমাধমে কপি করার প্রয়াস সাধুবাদ পাওয়ার যোগ্য। কিন্তু কাজটি ওডিশা’র চেয়েও উন্নত না হওয়া এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নাম দিয়ে প্রচার করাটা প্রতারনামূলক বিবেচনায় পুরো ঘটনাটি সমালোচনার উর্ধ্বে নয়। কারন গোটা প্রতিষ্ঠান প্রতারণা করাটা এক ধরনের অশনি সংকেত বটে। কেননা, দেশে প্রথমবারের মতো আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স-এআই বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মাধ্যমে সংবাদ উপস্থাপন করতে গিয়ে কি তারা দেশের প্রথম প্রতারক গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠান হয়ে গেলো কি না, সেটিও ভাবার বিষয়।


View Comments
10.0 / 10 |
//